হজ্বের কাফেলা রওয়ানা হয়েছে সুদুর খোরাসান থেকে। সে যুগের সফর ছিলো সে যুগের মত। কষ্টের উপর কষ্ট এবং বিপদের উপর বিপদ। পথে পথে, পদে পদে বিভিন্ন দুর্যোগ। সমস্ত বিপদ-দুর্যোগ উপেক্ষা করে এবং জানমালের খাতরা কবুল করেই তখন চলতো হজ্বের কাফেলা। সেই কাফেলায় ছিল এক সওদাগরের ক্রীতদাসী। না, আমি ভুল বলেছি; সে ছিলো আল্লাহর প্রিয় দাসী। আল্লাহর মুহাব্বাতে তার কলব ছিলো বে-তাব, বে-কারার। কাফেলা বিভিন্ন মানযিলে থামে, আর আল্লাহর দাসী ব্যাকুল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে দিগন্তবিস্তৃত মরুভূমির দিকে। কোথায়, আর কতদুর আল্লাহর ঘর! কাফেলা যত আগে বাড়ে, আল্লাহর ঘর যত কাছে আসে দাসীর অস্থিরতা ও ব্যাকুলতা তত বাড়তে থাকে। মরুভূমির তাপ এবং তার হৃদয়ের উত্তাপ যেন একাকার হয়ে যায়।
সুদীর্ঘ সফর শেষে কাফেলা অবশেষে মক্কা শহরে প্রবেশ করলো এবং পবিত্র হারামের নিকটবর্তী হলো। আল্লাহর দাসী তখন এমনই ‘দিওয়ানা’ যে, বুক যেন ভেঙ্গে যায়, কলব যেন ফেটে যায়। তার ব্যাকুল দৃষ্টিতে একই জিজ্ঞাসা, কোথায়! কোথায় আমার মাওলার ঘর! কাফেলা হয়রান পেরেশান। দাসীর অবস্থা তখন লবেজান! অবশেষে হাবশী দাসীকে দেখানো হলো কালো গিলাফে ঢাকা আল্লাহর ঘর। আর সে শুধু একটি চিৎকার দিলো, ‘দেখেছি, আমার আল্লাহর ঘর আমি দেখেছি! পেয়েছি, আমার আল্লাহকে আমি পেয়েছি!’ তারপর? তারপর কি হলো? আল্লাহর দাসী আল্লাহর ঘরের সামনে লুটিয়ে পড়লো এবং তড়পাতে তড়পাতে স্থির হয়ে গেলো। তার স্বপ্ন পূর্ণ হলো, একটি নয়, দুটি; ঘর এবং ঘরের মালিকের সঙ্গে মিলনের স্বপ্ন।
উৎসঃ
বাইতুল্লাহর মুসাফির
আবু তাহের মিছবাহ
বায়তুল্লাহ সফরের যে কোন সহযোগীতার জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করুনঃ ০১৯-৭২৭৭-২৩২৭