ITHMINAAN

Search
Close this search box.
যেমন হওয়া উচিৎ শিশুদের সাথে বড়দের আচরণ

এই যৎসামান্য লেখাটি একটি অসামান্য হাদিস দ্বারা অনুপ্রাণিত; প্রসিদ্ধ সাহবী আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহুর ছোট ভাই আবূ উমাইর রাযিয়াল্লাহু আনহুকে তাদের সম্মানিত পিতা একটি ছোট্ট চড়ুই/ পাখি এনে দেন। ছোট্ট আবূ উমাইর রাযিয়াল্লাহু আনহু সেই পাখিটির সাথে খেলা করতে খুবই আনন্দ পেতেন এবং পাখিটির নাম রাখেন নুগাইর। আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আবূ উমাইর রাযিয়াল্লাহু আনহুদের বাসায় প্রায়শই যাতায়াত ছিলো এবং তিনি ঐ পাখিটির ব্যাপারে জানতেন। শুধু জানতেনই এমন নয় বরং পাখিটির সাথে আবূ উমাইর রাযিয়াল্লাহুর কর্মকাণ্ড অনেক উপভোগ করতেন। এই আনন্দময় খেলাতে তিনি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও বাধা দেননি, অনেক সময় এমনও হয়েছে যে সলাতের সময় হয়ে গেলে পাখির খেলার/ বিচরণের জায়গাটিতে কিছুটা পানি ছিটিয়ে ও ঝেড়ে সেখানেই সবাই একত্রে সলাত আদায় করেছেন। একদিন সেই নুগাইর অর্থাৎ আবূ উমাইর রাযিয়াল্লাহু আনহুর পাখিটি মারা যাওয়ার খরব শুনে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে যান এবং শোকার্ত ছোট্ট শিশু সাহবী আবূ উমাইর রাযিয়াল্লাহু আনহুকে অতি আদরভরে শান্তনা দেন, বলেন; “হে আবূ উমাইর, কি করছে তোমার নুগাইর?” -সুবহানাল্লাহ!

একবার ভেবে দেখুন, কতো গভীর এই কথা, কতোখানি তাৎপর্যে পরিপূর্ণ এই বাক্য! এই বাক্য দিয়েই প্রিয় রাসূল তার ছোট্ট সাহবীকে শোক থেকে বাস্তবতার এক গভীর জগতে প্রবেশ করালেন। শিখালেন মৃত্যু কি এবং দুনিয়া ও বারযাখের জীবনের পার্থক্য ও তাৎপর্য। – সুবহানাল্লাহ!

  • রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও শিশুদের প্রতি বিরক্ত হতেন না।
  • তিনি সবসময় শিশুদের সাথে শিশুসুলভ আচরণ করতেন।
  • তিনি শিশুদের আনন্দে আনন্দিত হতেন।
  • তিনি শিশুদের অতি স্নেহের সাথে জীবন-বিধান শিক্ষা দিতেন।

সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আজিম।

সর্বশ্রেষ্ঠ, করুনাময় ও মহাপরাক্রমশালী রব্বুল আলামিন আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ, তিনি আমাদেরকে সীরাতে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যথাযথ শিক্ষা নেওয়ার উপযুক্ততা দান করেন। আমাদেরকে সুন্নার উপর পাবন্দি করার তাওফিক দান করেন, ইবাদুর রহমান হিসাবে কবুল করেন। আমাদেরকে আনফাল দান করেন। আমাদের সন্তানদেরকে নেক সন্তান হিসাবে কবুল করেন। আর আমাদেরকেও নেক পিতা-মাতা তথা অবিভাবক হিসাবে কবুল করেন। সন্তানকে উত্তম শিক্ষা উত্তম উপায়ে দেওয়ার যোগ্যতা দান করেন। আমাদেরকে সবরকারীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে সম্মানিত করেন। আমাদেরকে সদাচারী হওয়ার তাওফিক দিন, আমাদের অন্তরে দ্বীন প্রতিস্থাপন করে দিন। আমাদের দুনিয়া ও আখিরাত নিরাপদ করে দিন। ইয়া জাল-জালালি ওয়াল ইকরাম, রব্বির হামহুমা কামা রব্বাইয়ানি সগীরা। রব্বি হাবলি মিনাস-সলিহিন। ওয়া বিকা নাস্তায়্যিনু ইয়া মুস্তায়ান। ওয়া সল্লাল্লাহু আলান-নাবিয়্যি। আমিন, ইয়া রব্বুল আলামিন।

হাদিসঃ আদব অধ্যায়।
সংকলনঃ বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ।

আন্তর্জাতিক নং: ৬২০৩

باب الْكُنْيَةِ لِلصَّبِيِّ وَقَبْلَ أَنْ يُولَدَ لِلرَّجُلِ

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَارِثِ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَحْسَنَ النَّاسِ خُلُقًا، وَكَانَ لِي أَخٌ يُقَالُ لَهُ أَبُو عُمَيْرٍ – قَالَ: أَحْسِبُهُ – فَطِيمًا، وَكَانَ إِذَا جَاءَ قَالَ: «يَا أَبَا عُمَيْرٍ، مَا فَعَلَ النُّغَيْرُ» نُغَرٌ كَانَ يَلْعَبُ بِهِ، فَرُبَّمَا حَضَرَ الصَّلاَةَ وَهُوَ فِي بَيْتِنَا، فَيَأْمُرُ بِالْبِسَاطِ الَّذِي تَحْتَهُ فَيُكْنَسُ وَيُنْضَحُ، ثُمَّ يَقُومُ وَنَقُومُ خَلْفَهُ فَيُصَلِّي بِنَا

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবচেয়ে অধিক সদাচারী ছিলেন। আমার এক ভাই ছিল; ’তাকে আবূ ’উমায়র’ বলে ডাকা হতো। আমার ধারণা যে, সে তখন মায়ের দুধ খেতো না। যখনই সে তাঁর নিকট আসতো, তিনি বলতেনঃ হে আবূ ’উমায়র! কী করছে তোমার নুগায়র? সে নুগায়র পাখিটা নিয়ে খেলতো। আর প্রায়ই যখন সালাতের সময় হতো, আর তিনি আমাদের ঘরে থাকতেন, তখন তাঁর নীচে যে বিছানা থাকতো, একটু পানি ছিটিয়ে ঝেড়ে দেয়ার জন্য আমাদের আদেশ করতেন। তারপর তিনি সালাতের জন্য দাঁড়াতেন এবং আমরাও তাঁর পেছনে দাঁড়াতাম। আর তিনি আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করতেন।

মূল ছবিঃ ইবরাহীম আল-কান্দারী

পোষ্টের তারিখ ও সময়

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *